দুর্ভাগ্য যেন পিছুই ছাড়ে না ব্রাজিল ফুটবল দলের ‘পোষ্টাররয়’ নেইমারের। গত বিশ্বকাপে ইনজুরিতে পড়ে পুরো আসর থেকেই ছিটকে গিয়েছিলেন। চার বছর পর বিশ্বসেরা নির্বাচনের আসরে আবারও ইনজুরিতে এই প্রতিভাবান সুপারস্টার। ইনজুরিতে পড়ে প্রতিভার প্রতিফলন যেন মাঠেই চাপা পড়ে গেছে সেলেসাও এই তারকার।
দীর্ঘ ২০ বছরের শিরোপা খরা ঘুচানোর স্বপ্ন নিয়েই কাতার বিশ্বকাপে এসেছিল ব্রাজিল। নেইমারকে ঘিরেই হেক্সা মিশনের পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন কোচ তিতে। কিন্তু চলতি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই গোড়ালির চোটে পড়ে গেলেন ৩০ বছরের এই তারকা। ফলে গ্রুপপর্বের বাকি দুই ম্যাচে তো খেলতে পারবেনই না, শেষ হয়ে যেতে পারে পুরো বিশ্বকাপটাই! দেশের হয়ে স্বদেশি কিংবদন্তি পেলের চেয়ে মাত্র দুই গোলে পিছিয়ে রয়েছেন নেইমার।
তবে দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামে সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ডান পায়ের গোড়ালিতে চোট পান তিনি। তাই তো মাঠ থেকে বের হওয়ার সময় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটছিলেন তিনি। এমনকি সাইডবেঞ্চে বসে জার্সি মুখে চেপে নীরবে চোখের জল ফেলছিলেন পিএসজির এই তারকা।
তবে কঠিন এই সময়ে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না ব্রাজিলের হেক্সা মিশনের নায়ক। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেইজে এবারের বিশ্বকাপে নিজ দেশের জাতীয় সঙ্গীতের সময়কার একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। যেখানে একরাশ হতাশা আর না পাওয়ার কষ্টের আবেগী বার্তা দিয়েছেন তিনি। নেইমারের সেই স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
‘এই শার্টটি (জার্সি) পরে আমি যে গর্ব এবং ভালোবাসা অনুভব করি তা বর্ণনাতীত। ঈশ্বর যদি আমাকে জন্মের জন্য একটি দেশ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেন, তা হবে ব্রাজিল। আমার জীবনে কিছুই প্রদত্ত বা সহজ ছিল না। আমাকে সবসময় আমার স্বপ্ন এবং আমার লক্ষ্যগুলোকে তাড়া করতে হয়েছে। কখনও কারো ক্ষতি কামনা করিনি বরং যাদের দরকার তাদের সাহায্য করেছি। আজ আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি… এবং আবারও একটি বিশ্বকাপে। আমি ইনজুরিতে পড়েছি। হ্যাঁ, এটা বিরক্তিকর, এটি কষ্ট দেয়। তবে আমি নিশ্চিত যে আমি ফিরে আসার সুযোগ পাব। কারণ আমি আমার দেশ, আমার সতীর্থ এবং নিজেকে সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। শত্রুরা আমাকে এভাবে বিধ্বস্ত করার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করবে? কখনই না! আমি অসম্ভবের পুত্র এবং আমার বিশ্বাস অসীম। ’
নেইমারের ইনজুরি কতটা গুরুতর সেটি এক্স-রে করানোর পর জানা যাবে। এজন্য ফলাফল পেতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে বলেছেন ব্রাজিল দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লেসমার। ব্রাজিল কোচ তিতেও নেইমারকে পেতে বেশ আশাবাদী।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালেও ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে পিঠের চোটে পড়েছিলেন নেইমার। পরে সেমিতে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অধরাই রয়ে গিয়েছিল ব্রাজিলের। এবার কাতার বিশ্বকাপেও কি নেইমার বাদ পড়বেন। নাকি নকআউট পর্বে ব্রাজিল জায়গা করে নিলে মাঠে ফিরতে পারেন তাই এখন দেখার বিষয়।